সুলতানা পারভীন হেলেন »
একদিন মনে করে ঠিক তোকে ভুলে যাবো।
ভুলে যাবো স্বস্তাদরে কিনে আনা ভালোবাসার রূপোলি চিঠির কথা,
ভুলে যাবো চুলের বিনুনিতে গুঁজে দেয়া প্রতিটি বেলীফুলের গল্পগাঁথা।
ভুলে যাবো তোর লেখা প্রতিটি চিঠির কথা,
যে চিঠি ছিলো ভালোবাসার লাল-নীল সংসারে ভরা।
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম,
একগুচ্ছ কদম দেবো প্রতিটি শ্রাবণমেঘে,
উত্তরীয় হয়ে জড়াবো তোকে সামনের সবগুলো শীতে।
বলেছিলি, ভালোবাসায় সেকেলে ভাবটার নাকি খুব প্রয়োজন।
তাই কথা দিয়েছিলাম
শাড়ির আঁচলে বুনে দেবো একঝাক শিউলি ফুল,
সামনের শীতে জোনাক ধরে গড়িয়ে দেবো নাকফুল
রাধাচূড়ার কণ্ঠি পড়িয়ে দেবো গলে।
যেদিন তোর ভ্রু উপরে তিল টা আমাকে মুগ্ধ করেছিল,
অন্তর্যামী জানেন, সেদিনই লেখা হয়েছিলো তোর আমার প্রণয়ের মহাকাব্য।
আকাশের সব নীলে গড়া টিপ আর ভ্রমরকৃষ্ণ কাজল চোখে
তোর যে প্রমত্ততা আমায় বধ করেছিলো,
সে আজ ঘূর্নিপাকে পথ হারায়, মুখ থুবড়ে পড়ে স্বপ্নলোকে।
খেলাঘর বাঁধতে এসে, ভেঙে দিয়ে গেলি বৈশাখী ঝড় হয়ে।
ভুলে সব প্রতিশ্রুতি, চলে গেলি আমায় একলা করে দূর বহুদূরে।
যদি দূরবীণে চোখে রেখে ভবিষ্যৎটা দেখা যেতো
তবে এজন্মেই সব ঋণ শুধিয়ে দিতাম জমা আছে যত।
যেদিন থেকে শব্দেরা আঙুলের ডগা থেকে বিদায় জানিয়েছিলো,
সেদিন পুনরায় প্রতিজ্ঞা করেছিলাম –
একদিন মনে করে ঠিক তোকে ভুলে যাবো।
অপ্রকাশিত কাব্যেরা যেদিন
বুকের গভীরে আশ্রয় চেয়ে হারিয়ে গেছিলো মৃত অন্ধকূপে,
সেদিনই প্রথম প্রতিজ্ঞা করেছিলাম –
একদিন ঠিকই চুপ করে আমি মিশে যাবো নিগূঢ় নিস্তব্ধতায়।
সত্যি করে বলছি –
একদিন মনে করে ঠিক তোকে ভুলে যাবো।
বাংলাধারা/এফএস/এইচএফ