বাংলাধারা প্রতিবেদক »
বাংলাদেশের অন্যতম আন্তঃজেলা পরিবহন সংস্থা গ্রীনলাইন পরিবহন। আন্তঃজেলা ছাড়াও ভারতের কলকাতায়ও পরিবহন সুবিধা দিয়ে থাকে তারা। যাত্রাপথে প্রতি ওয়াক্তের নামাজের জন্য বিরতি দিয়ে ইতোমধ্যে যাত্রীদের ব্যাপক প্রশংসা কুঁড়িয়েছে বাংলাদেশি এ পরিবহন সংস্থাটি।
সম্প্রতি, ফজরের নামাজের বিরতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ। পোস্টের মন্তব্যের ঘরে নামাজের বিরতি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্যের পাশাপাশি দেখা যায় অনেকের নেতিবাচক মন্তব্যও। নেতিবাচক মন্তব্যের উত্তরে ‘নামাজের বিরতি নিয়ে আপত্তি থাকলে আমাদের বাসে ভ্রমণের প্রয়োজন নেই’ বলে উত্তর দিয়ে ফের প্রশংসায় ভাসছে এ পরিবহন সংস্থাটি। ইতোমধ্যে সেই উত্তরের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
গতকাল (২৯ নভেম্বর) গ্রিন লাইনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে পোস্ট করা ওই ভিডিওটি ইতোমধ্যে শেয়ার হয়েছে হাজারের কাছাকাছি এবং মন্তব্যের ঘরে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের মতামত দিয়েছেন।
ওই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে জামিনুল ফেরদৌস সুমন নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেন, ‘এই জন্যে উঠতে ইচ্ছে করে না। কিছুক্ষণ পর পর নামাজের বিরতি। এদেশের মানুষের কাজই যেন নামাজ পড়া।’
ঠিক একই মন্তব্যের উত্তরে কর্তৃপক্ষ লিখেছে, ‘স্যার, নামাজের বিরতির জন্যে আপনার আপত্তি থাকলে আমাদের বাসে আপনার ভ্রমণের প্রয়োজন নেই।’
আর এ মন্তব্য এবং কর্তৃপক্ষের উত্তরের স্ক্রিনশটটি দেশব্যাপী ভাইরাল হওয়ার পরপরই জামিনুল ফেরদৌস সুমন নামে ওই ব্যক্তি তার ফেসবুক আইডি ডিএকটিভ করে দেন। একইসাথে মুছে ফেলেন তার করা মন্তব্যটিও।
ওই একই পোস্টে কমল ব্যাপারি নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘জরুরী কাজ ছাড়া মানুষ বাড়ি ছাড়ে না।যাত্রা পথে মানুষ মুছাফির থাকে।এই অবস্থায় নামাজ ছুটে গেলে তা পরে পড়ে নেওয়া যায়।এতে নামাজ কাজা হয় না।আপনারা যা করছেন, সেটা কম্পানির মার্কেটিং জন্য করছেন। কোনো দিন যেন এই পরিবহনে উঠা না লাগে সে চেষ্টা করব।’ (বানান অপরিবর্তিত)
প্রতিউত্তরে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ বলে, ‘স্যার শুধু চেস্টা নয়, আমাদের বাসে ভ্রমন না করার জন্যে আহবান রইলো। এখানে আমরা শুধুমাত্র যাত্রীদের নামাজের বিরতি নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছি, আরো বলেছি আমাদের বাসের ড্রাইভার এবং গাইড যাত্রীর নামাজ বিরতির নির্দেশনা মানতে বাধ্য থাকবে।’
আরও বলেন, ‘১৯৯০ সাল থেকে আমরা ব্যবসা করি, আর নামাজের বিরতির সিস্টেম তখন থেকেই। ৩২ বছর ধরে আলহামদুলিল্লাহ্ সুনামের সাথে ব্যবসা করে যাচ্ছি, আমাদের আলাদা করে মার্কেটিং এর প্রয়োজন নেই।’
আবার অনেকেই নামাজের বিরতির বিষয়টি নিয়েছেন খুবই ইতিবাচকভাবে। এসকে মনির নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের এ উদ্যোগের প্রশংসা জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমি গ্রীনলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অনেকবার গিয়েছি। যদি বাসের ভিতরে একজন নামাজী ব্যক্তি ও থাকে যদি গিয়ে ড্রাইভারকে বলে ড্রাইভার সাহেব সালাত আদায় করব, ড্রাইভার সাহেব মসজিদ দেখে ঠিকই থামিয়ে দেয়। এজন্যই ভালো লাগে!’
আবার কেউ কেউ গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষের এমন উত্তরের পর এখন থেকে তাদের বাসেই ভ্রমণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। অনেকেই লিখেছেন, শুধু এই একটি কারণের জন্যেই তাদের বাসে একবার হলেও ভ্রমণ করতে চান।
বাংলাধারা/আরএইচআর