লাইফস্টাইল ডেস্ক »
মন খারাপ? তবে খেতে পারেন ডিম, মাশরুম, কাঠবাদাম বা মাংস। কারণ প্রোটিন সমৃদ্ধ বিভিন্ন খাবারে থাকা উপাদান মন মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
উৎফুল্ল মনোভাবের জন্য আমরা নানান কিছু করি। তবে ‘মার্কিন ফিজিশিয়ান অ্যান্ড পেইন ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট’ ডা. রুবেন চ্যান জানান, মন ভালো রাখতে ও মানসিক চাপ কমাতে দৈনিক খাবার তালিকায় উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ কিছু খাবার যোগ করা উপকারী।
ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার
ডা. চ্যান জানান মেজাজের উন্নতি ঘটাতে ভিটামিন ডি খুবই প্রয়োজন। এই উপাদানের অভাবে যেমন হাড় দুর্বল হয় তেমনি মানসিক অবস্থারও অবনতি হতে পারে।
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, ‘বিষণ্নতা কমাতে ও মেজাজ ভালো রাখতে ভিটামিন ডি’র পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করা জরুরি। যদি মনে হয় এই ভিটামিনের অভাব রয়েছে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আলাদা করে ট্যাবলেটও খাওয়া যেতে পারে।’
আর প্রোটিন সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক উৎসের মধ্যে রয়েছে- ডিম, মাশরুম, স্যামন মাছ ইত্যাদি।
স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ওমেগা-থ্রিস
মস্তিষ্কে আনন্দের অনুভূতি বাড়িয়ে দিতে পারে ওমেগা থ্রিস ও স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার।
ডা. চ্যানের ভাষায়, ‘আনস্যাচুরেইটেড ফ্যাট এবং ওমেগা থিস যুক্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- বাদাম, মাছ, কাঠবাদাম, সয়াবিন, চিয়া বীজ এসব যেমন মন ভালো রাখতে সাহায্য করে তেমনি বিষণ্ন হওয়ার হাত থেকেও বাঁচায়।’
ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
ঘুমের মান উন্নত করতে ম্যাগনেসিয়াম সাহায্য করে। পাশাপাশি মেজাজের ওঠা-নামা কমাতেও এই খনিজ উপকারী।
ডা. চ্যান বলেন, ‘প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার কুমড়ার দানা, ওটমিল, বাদামি চাল এবং পালংশাক ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস। এগুলো ঘুমের মান ভালো করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে। আর কমাতে পারে মানসিক চাপ।’
ভিটামিন ডি’র কার্যকারিতা বাড়াতেও ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন। তাই বাদামি চালের ভাতের সঙ্গে ডিম, পালংশাক কুমড়ার বীজ ও রোস্ট করা মাশরুম খেতে পারলে মনের স্বাস্থ্য আরও বেশি ভালো হবে।
জিঙ্ক সমৃ্দ্ধ প্রোটিন ধরনের খাবার
‘প্রোটিন সমৃদ্ধ যেসব খাবারের মধ্যে জিঙ্ক রয়েছে, সেগুলো খেতে পারলে স্নায়ু থেকে মস্তিষ্কে সংকেত প্রেরণের মান উন্নত হয়। যা কিনা মানসিক চাপ ও বিষণ্নতা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে’, বলেন ডা. চ্যান।
এই ধরনের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে- লাল মাংস, মটরশুঁটি ও ছোলা।
বিষণ্নতায় ভোগা রোধে এড়াতে হবে তিন ধরনের খাবার
ডা. চ্যান বলেন, ‘মন ভালো রাখার খাবার খাওয়ার পাশাপাশি কিছু খাবার এড়াতে হবে যা মেজাজ খারাপ করে দিতে ভূমিকা রাখে।’
অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার
বাড়তি চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ার পারিমাণ কমাতে হবে। কারণ এসব খাবার রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে যে প্রভাব পড়ে সেটার ফলাফল হল ক্লান্তি বোধ আর মেজাজের ভারসাম্য হারানো।
দুগ্ধজাত খাবার
দুধ, দই ও পনির দেহে অপিঅয়েড পেপটাইজ উৎপন্ন করে। যাদের দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খেলে সমস্যা হয় তাদের জন্য এক্ষেত্রে ঘুমঘুমভাব নিয়ে আসবে।
সবার জন্য সমস্যাকর না হলেও, ‘ল্যাক্টোজ’ যারা সহ্য করতে পারেন না তাদের দুগ্ধজাত খাবার থেকে দেখা দিতে পারে ঢিলাঢালা ও ঘুমঘুমভাব।
ডুবন্ত তেলে ভাজা খাবার
ট্রান্স ফ্যাট’য়ের মতো স্যাচুরেইটেড ফ্যাট থাকে বেশি তেলেভাজা খাবারে। এসব পেটে গোলমাল বাধিয়ে শক্তির অপচায় ঘটায়। যা কিনা সারা শরীরে প্রভাব ফেলে।
ট্রান্স ফ্যাট মস্তিষ্কের কাজেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলে দিনের বেলাতেও ঘুম লাগতে পারে। পাশাপাশি টাইপ টু ডায়াবেটিস, হৃদসংক্রান্ত নানান রোগ ও মস্তিষ্কের অন্যান্য রোগে ভোগার সম্ভাবনাও বাড়ে।