বাংলাধারা ডেস্ক »
তিন সপ্তাহ না যেতেই আবার এল বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা; পাইকারিতে গড়ে ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং খুচরায় ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য বিদ্যুতের নতুন মূল্যহার নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।
এর ফলে খুচরায় গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ভারিত গড়ে দাঁড়াবে ৭ টাকা ৮৫ পয়সা, যা আগে ৭ টাকা ৪৮ পয়সা ছিল। আর ভারিত গড়ে পাইকারি বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হচ্ছে ৬ টাকা ৭০ পয়সা।
সোমবার বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসের বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেত্রে নতুন এই মূল্যহার কার্যকর হবে।
বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য বিদ্যুতের খুচরা গ্রাহকদের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্নভাবে দাম বাড়ানো হয়েছে। তাতে খুচরায় গড়ে ৫ শতাংশ দাম বেড়েছে। এছাড়া পাইকারিতেও ২৩০ কেভি লাইন, ১৩২ কেভি লাইন ও ৩৩ কেভি লাইনের জন্য বিতরণ সংস্থাভেদে বিভিন্ন রকম দাম ঠিক করা হয়েছে। তাতে গড়ে ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ দাম বেড়েছে।’
গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দর ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ টাকা ২০ পয়সা ঠিক করেছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিইআরসি। আড়াই মাসের মাথায় সরকার নির্বাহী ক্ষমতাবলে তা আরও ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ বাড়ালো।
আগে বছরে সর্বোচ্চ একবার গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সুযোগ পেত নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিইআরসি। পরে নীতি পরিবর্তন করে বছরে একাধিকবার মূল্য সমন্বয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়।
সেখান থেকে আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে গণশুনানি এড়িয়ে সরাসরি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের পথ সুগম করা হয় গত বছরের শেষে। এরপর একমাসের মধ্যেই একবার গ্যাসের দাম এবং দুইবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ফেললো সরকার।
সর্বশেষ ১২ জানুয়ারি খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়, তাতে ভারিত গড়ে প্রতি ইউনিটের দাম দাঁড়ায় ৭ টাকা ৪৮ পয়সা, যা জানুয়ারি মাসের বিলের সঙ্গে কার্যকর হওয়ার কথা। এরপর ফেব্রুয়ারির জন্য তা আরও ৫ শতাংশ বাড়ল।
ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা আগেই জানিয়েছিলেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সোমবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক মাসেই গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করার কথা আমরা আগেই বলেছিলাম। আগামী মাসে বিদ্যুতের দাম আরেকবার সমন্বয় করতে হবে। আমাদের আর ভর্তুকি দেওয়ার সুযোগ নেই। এখন এভাবে সমন্বয়ের মধ্য দিয়েই যেতে হবে।’
দাম বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দাম বাড়াতে হবে। আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রয়োজনে মাসে মাসে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করবে। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দেশেও কমবে।’
শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম গত ১৮ জানুয়ারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তবে বাড়তি দর আপাতত কার্যকর না করে আরও কিছুটা সময় নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।