বাংলাধারা ডেস্ক »
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গুমাই বিল পরিচিত চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার হিসেবে। উপজেলার বিশাল সীমানাজুড়ে এর বিস্তৃতি। উৎপাদন নির্ভর অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিলটি এখন ভরে যাচ্ছে বাড়ি-ঘর আর দোকানপাটসহ যত্রতত্র স্থাপনায়।
জানা যায়, মরিয়মনগর, হোসনাবাদ, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, লালানগর ইউনিয়নসহ রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড এবং নিশ্চিন্তাপুর পাহাড়ের পাদদেশে চন্দ্রঘোনা পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে গুমাই বিল। এখানে মোট আবাদি জমির পরিমাণ ২ হাজার ৪শ হেক্টরেরও বেশি। প্রচলিত আছে, এই বিল সমগ্র বাংলাদেশের আড়াই দিনের ধানের যোগান দেয়।
দেখা যায়, গুমাই বিলে সম্প্রতি বাড়ি-ঘর ও দোকানপাটসহ যত্রতত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিলটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গুমাই বিলের জমি নাল শ্রেণির। এটি অপরিবর্তিত রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ভূমি ব্যবহার নীতিমালা-২০০১ এবং রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন-১৯৫০ অনুযায়ী শ্রেণি পরিবর্তন করতে জেলা প্রশাসকের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন।
জানা যায়, বিলে স্থাপনা নির্মাণ প্রবণতা রোধ করতে সম্প্রতি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানী গত ২ মাসে এ ধরনের প্রায় ৩টি বসতঘর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে বিভিন্ন সময় গুমাই বিলে গড়ে ওঠা বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নু-এমং মার্মা মং এর নেতৃত্বেও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
এদিকে সমগ্র গুমাই বিলে শ্রেণি পরিবর্তন করে কোনও স্থাপনা না করতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। একইসাথে মাইকিং করে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা ভূমি অফিস।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম বলেন, গুমাই বিল রাঙ্গুনিয়ার ঐতিহ্য। একইসাথে জাতীয় সম্পদ। যে কোনও মূল্যে গুমাই বিল রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব। আর ফসলের আবাদ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট অনুশাসন রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানী বলেন, প্রশাসনের এই কঠোর অবস্থানে রাঙ্গুনিয়াবাসী সম্পৃক্ত। উপজেলার মানুষ এটাকে গুমাই বিল রক্ষার আন্দোলন হিসেবে দেখতে চায়।